লক্ষীছড়িতে পিসিপি’র সমাবেশে সেনাবাহিনীর হামলা, আটক ৮ জনের মধ্যে ৭ জনকে মুক্তি

0

লক্ষীছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়িতে গতকাল শনিবার (২০ মে) পিসিপি’র আয়োজিত সমাবেশে সেনাবাহিনী দু’দফায় হামলা ও গণগ্রেফতার চালিয়ে প্রাইমারী স্কুলের ছাত্রসহ ৮ জনকে আটক করা হয়। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে রাতে ৭ জনকে জোন থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। তবে শিমুল চাকমা নামে একজনকে লক্ষীছড়ি থানায় হস্তান্তর করা হলে আজ রবিবরি (২১ মে) সকালে খাগড়াছড়ি জেলা আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Laxmichariগতকাল ২০ মে ছিল পিসিপি’র ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এই দিনকে উপলক্ষ করে পিসিপি আটক নেতা-কর্মীদের মুাক্তর দাবি জানিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করে। এরই অংশ হিসেবে লক্ষীছড়িতেও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে পিসিপি’র স্থানীয় শাখা।

সকাল ১০টায় লক্ষীছড়ি সদর ইউনিয়নের বাদি পাড়া থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শিলাছড়িস্থ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে সমাবেশ করতে থাকে পিসিপি’র নেতা-কর্মীরা। সমাবেশের শুরুতে বক্তব্য রাখেন পিসিপি লক্ষীছড়ি উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক সম্পাদক নয়ন চাকমা। এরপর বক্তব্য দিতে থাকেন পিসিপি’র লক্ষীছড়ি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক উজ্জল চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন উপজেলা শাখার সভাপতি রেশমী মারমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ক্যামরন দেওয়ান।

ক্যামরন দেওয়ান বক্তব্য শুরু করেলে লক্ষীছড়ি সদর জোন থেকে সেনাবাহিনীর একদল সদস্য এসে সমাবেশ বাধা প্রদান করে এবং ব্যানার কেড়ে নিতে চেষ্টা করে। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পিসিপি’র নেতা কর্মীরা সেনাবাহিনীর অগণতান্ত্রিক হস্তক্ষেপের বিরোধীতা করলে সেনারা লাঠিচার্জ করা শুরু করে। এসময় সমাবেশে উপস্থিত ছাত্ররাও প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ছাত্রদের সাহসী প্রতিরোধের মুখে সেনাবাহিনী পিছু হটে এবং সমাবেশস্থল থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়।

এর কিছুক্ষণ পর আবারো বিরাট একটি সেনা দল এসে পূনরায় সমাবেশে হামলা ও গণগ্রেফতার চালায়। এতে বেশ কয়েকজন ছাত্র ও পথচারী আহত হয় এবং দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ বছর বয়সী ছাত্র থেকে শুরু করে ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধ পর্যন্ত ৮ জনকে আটক করে জোনে নিয়ে যায়।

আটককৃতরা হলেন- বাদি পাড়া থেকে রাঙ্গাচোগা চাকমার ছেলে লক্ষীছড়ি সদর সরকারী প্রথামিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর ছাত্র সুপন চাকমা (১২) ও একই স্কুলের হাজাছড়ি গ্রামের তরুনি চাকমার ছেলে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র নিকেল চাকমা(১০), চেঙ্গী মুখ পাড়ার মৃত বলরাম চাকমার ছেলে হৃদয় বাবু চাকমা(৭০), একই গ্রামের মনকুমার চাকমার ছেলে দয়াল চাকমা(২০) ও নিরঞ্জয় চাকমার ছেলে মধু চাকমা(২৫), যতীন্দ্র কার্বারী পাড়া থেকে মদি চন্দ্র চাকমার ছেলে শিমুল চাকমা(২৫),  বাদি পাড়া থেকে অনিল চাকমা(৪০) ও প্রবিন্দু চাকমার ছেলে ব্রত চাকমা(২২)।

জোনে নিয়ে গিয়ে তাদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে রাতে শিমুল চাকমা বাদে ৭ জনকে জোন থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শিমুল চাকমাকে রাতে থানায় হস্তান্তরের পর আজ রবিবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
—————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More