লক্ষ্ণীছড়িতে বোরকা পার্টির সন্ত্রাস বন্ধ ও অপহৃত গ্রামবাসীদের উদ্ধারের দাবিতে থাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি পেশ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়িতে সেনা-সন্তু মদদপুষ্ট বোরকা পার্টির সন্ত্রাস ও সেনা মদদদান বন্ধ এবং বর্মাছড়ির শুকনাছড়ি থেকে অপহৃত তিন গ্রামবাসীকে উদ্ধারের দাবিতে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে।
আজ ২৩ নভেম্বর বুধবার দুপুর দেড় টায় খাগড়াছড়ি সদরের মহাজন পাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে চেঙ্গী স্কোয়ার ঘুরে স্বনির্ভর বাজারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সহ সভাপতি সর্বানন্দ চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অর্পন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি আপ্রুসি মারমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক শিখা চাকমা। সমাবেশ পরিচালনা করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক নিকোলাস চাকমা।
বক্তারা বলেন, লক্ষ্মীছড়িতে সেনা-সন্তু মদদপুষ্ট বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন ধরে হত্যা, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে গঠনের পর থেকে এই বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা আজ পর্যন্ত্ম কমপক্ষে দুই ব্যক্তিকে খুন, ১৮ ব্যক্তিকে অপহরণ ও ৫০ জনকে মারধর করেছে। পাহাড়ি-বাঙালি ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নিয়মিত জোরপূর্বক চাঁদা আদায় ছাড়াও এরা অপহরণের পর মুক্তিপণ হিসেবে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করে আসছে। লক্ষ্মীছড়ি জোনের সেনা কর্মকর্তারা এই সন্ত্রাসীদের প্রত্যভাবে মদদ দিয়ে যাচ্ছে। লক্ষ্মীছড়ি থানা থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে জুর্গাছড়িতে অবস্থান করে বোরকা সন্ত্রাসীরা এসব অপকর্ম চালালেও প্রশাসন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
বক্তারা বলেন, গত ১৬ নভেম্বর বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা বর্মছড়ি ইউনিয়নের শুকনাছড়ি থেকে তিন গ্রামবাসীকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। আজ ৭ দিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসন তাদের উদ্ধারে কোন পদপে গ্রহণ করেনি। বরং লক্ষ্মীছড়ি জোন কমান্ডার আইন-শৃঙ্খলা মিটিঙে অপহরণকারী বোরকা সন্ত্রাসীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে সন্ত্রাসীদের পাবলম্বন করেছে।
বক্তারা বলেন, বোরকা সন্ত্রাসীদের ভয়ে লীছড়ির সাধারণ জনগণ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। গত ২১ অক্টোবর র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা লক্ষ্মীছড়ি সদরের জুর্গাছড়িতে বোরকা পার্টির আস্তানায় হামলা চালিয়ে এক সন্ত্রাসীকে নিহত, অপর একজনকে আটক ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলা বারুদ উদ্ধার করলেও এসব সন্ত্রাসীরা আজো প্রশাসনের নাকের ডগায় দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। বক্তারা অবিলম্বে বোরকা পার্টি ভেঙে দিয়ে তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করা ও অপহৃত তিন গ্রামবাসীকে উদ্ধারের জোর দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে সর্বানন্দ চাকমা ও অর্পন চাকমার নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসকের বরাবরে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন। স্মারকলিপিতে অবিলম্বে বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচার ও তাদের মদদদাতাদেরও শাস্তি দেয়া, জুর্গাছড়িতে বোরকা সন্ত্রাসীদের আস্তানা ভেঙে দেয়া, অপহৃত তিন গ্রামবাসীকে উদ্ধারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং লক্ষ্মীছড়িতে প্রত্যেক সংগঠন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক কার্যক্রম চালাতে পারে তার জন্য সুষ্ঠু ও উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার দাবি জানানো হয়।