লক্ষ্মীছড়ির বন্দুক যুদ্ধের ঘটনার সাথে ইউপিডিএফ-কে জড়ানোর প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ, ইত্তেফাক, প্রথম আলো পত্রিকায় অগ্নিসংযোগ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
লক্ষ্মীছড়িতে গতকাল ২১ অক্টোবর র্যাবের সাথে বোরকা পার্টি সন্ত্রাসীদের বন্দুক যুদ্ধের প্রকৃত চিত্র চাপা দিয়ে আজ ২২ অক্টোবর শনিবার দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় “লক্ষ্মীছড়িতে র্যাবের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে একজন নিহত” শিরোনামে প্রকাশিত খবরে ঘটনার সাথে ইউপিডিএফ-কে জড়িয়েযে খবর প্রকাশিত হয়েছে তার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও পত্রিকায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
উক্ত পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের শেষাংশে উল্লেখ করা হয়, “স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ঐ আস্তানাটি পার্বত্য শান্তি চুক্তি বিরোধী সংগঠন ইউপডিএফের। নিহত এবং আটক দুই জন ঐ সংগঠনেরই সদস্য।” অপরদিকে প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে লক্ষ্মীছড়ি ঘটনার প্রকৃত চিত্র আড়াল করে সন্ত্রাসীদের রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আজ ২২ অক্টোবর শনিবার বিকাল ৩টায় খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা পরিষদ এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে স্বনির্ভর বাজারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি আপ্রুসি মারমা বক্তব্য রাখেন।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, লক্ষ্মীছড়ির র্যাব-বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীদের বন্দুক যুদ্ধের প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে এবং স্থানীয় প্রশাসন ও সেনা কর্তৃপক্ষকে বাঁচাতে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে সন্ত্রাসীদের রক্ষার চেষ্টার অংশ হিসেবে ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ না করে ঘটনার সাথে ইউপিডিএফকে জড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে, প্রথম আলো পত্রিকাটি প্রকৃত ঘটনা চাপা দিতে বোরকা সন্ত্রাসী দলের মূল হোতা অনিল চাকমাকে জেএসএস লক্ষীছড়ি উপজেলার আহ্বায়ক হিসেবে উল্লেখ করে তার বক্তব্যকে হুবহু প্রচার করার মাধ্যমে তার আসল সন্ত্রাসী চেহারাকে আড়াল করা হয়েছে। যা সন্ত্রাসী গোষ্ঠিকে রক্ষার করারই সামিল। আপ্রুসি মারমা লক্ষ্মীছড়ি ঘটনাসহ অন্যান্য ঘটনাবলী সস্পর্কে সঠিক তথ্য তুলে ধরার জন্য সকল প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, একটি বিশেষ মহলের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা লক্ষ্মীছড়িতে খুন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় ও চাঁদাবাজি করে আসছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর তারা নির্মল চাকমাকে গুলি করে খুন করে, গত ২ অক্টোবর ধন কুমার চাকমাকে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে অপহরণ এবং সর্বশেষ গত ৯ অক্টোবর লক্ষ্মীছড়ি বাজার থেকে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে অপহরণের পরও প্রশাসন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বরং প্রশাসনের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন সহযোগিতা না করলে থানা থেকে ৩০০ গজ দূরে জুর্গাছড়িতে সন্ত্রাসীরা এভাবে আস্তানা তৈরি করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাতে পারতো না।
তিনি অবলিম্বে বোরকা সন্ত্রাসীদের মূল হোতা অনিল চাকমা সহ অন্যান্যদের গ্রেফাতার করে বোরকা পার্টির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার জোর দাবি জানান।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে দৈনিক ইত্তেফাক ও প্রথম আলো পত্রিকা পুড়ে দেয়া হয়।