শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী -গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম

0
ডেস্ক রিপোর্ট
সিএইচটিনিউজ.কম
প্রেস ব্রিফিংয়ে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতৃবৃন্দ। ছবি: সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি : গোমতি বাজারে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী, অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী মানসিকতার চরম প্রকাশ উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম।

খাগড়াছড়ি জেলাধীন মাটিরাঙ্গার গোমতিতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে আজ ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৩০টায় খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভরস্থ ঠিকাদার সমিতি ভবনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতৃবৃন্দ এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।


প্রেস ব্রিফিং থেকে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম নেতা পঞ্চসেন ত্রিপুরাকে হত্যার প্রতিবাদে আহুত পূর্ব নির্ধারিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে আগামী ২০ জুলাই সকালে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ এবং ২১ জুলাই সকালে মাটিরাঙ্গা সদরে মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়।

উক্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সভাপতি নিকোলাস চাকমা। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন যুব ফোরমের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা, কেন্দ্রীয় সদস্য জিকো ত্রিপুরা ও মাটিরাংগা উপজেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনি ত্রিপুরা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ১৮ মে সন্তু লারমার ভাড়াটে সন্ত্রাসী কর্তৃক গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম মাটিরাঙ্গা থানা শাখার সভাপতি পঞ্চসেন ত্রিপুরা খুন হন। এই জঘন্য হত্যার প্রতিবাদে আমরা প্রথমে ১৩ জুন গোমতি বাজারে সমাবেশ করার কর্মসূচী ঘোষণা করি। কিন্তু একটি সেটলার সংগঠন একই সময়ে ও একই স্থানে সমাবেশ আহ্বান করেছে এই অজুহাতে স্থানীয় প্রশাসন অন্যায়ভাবে ১৪৪ ধারা জারি করে আমাদের উক্ত সমাবেশ বানচাল করে দেয়। এর প্রতিবাদে আমরা সড়ক অবরোধ পালন করি ও গোমতি বাজার বয়কটের ডাক দিই। এই প্রেক্ষাপটে গত ৮ জুলাই স্থানীয় প্রশাসন ও বাঙালিদের প্রতিনিধি মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল হক ও গোমতি ইউনিয়নের মেম্বার মো: রফিকুল ইসলামের সাথে আমাদের ৭ দফা সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। এতে পঞ্চসেন ত্রিপুরাকে হত্যার প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম গোমতি বাজারে ছাত্র-যুব গণসমাবেশ আয়োজন করলে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও মুরুব্বীগণ তাতে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবেন মর্মে অঙ্গীকার করা হলে আমরা বাজার বয়কট কর্মসূচী প্রত্যাহার করতে সম্মত হই। সমঝোতার পর পরই আমরা পঞ্চসেন ত্রিপুরার হত্যার প্রতিবাদে গোমতিতে পুনরায় সমাবেশের কর্মসূচী ঘোষণা করি। নতুন ঘোষণা মোতাবেক আজ এই সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। এ সমাবেশ সম্পর্কে ১৫ জুলাই মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবগত করা হয়। কিন্তু সমাবেশ বানচাল করে দেয়ার জন্য প্রশাসন আবার ষড়যন্ত্র শুরু করে। গত ১৬ জুলাই মাটিরাঙ্গা থানা কর্তৃপক্ষ মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দোহাই দিয়ে সমাবেশ না করার জন্য লিখিতভাবে মতামত প্রদান করেন।সমাবেশ করতে অনুমতি না দেয়ার কারণ হিসেবে মাটিরাঙ্গা থানা কর্তৃপক্ষ (মোঃ অলিউল্লাহ) যা উল্লেখ করেছে তা সম্পূর্ণ অবাস্তব, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। প্রশাসন ষড়যন্ত্রমূলকভাবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাঁধা প্রদান করেছে। এই ষড়যন্ত্রের সাথে বিজিবিরও অংশীদারীত্ব রয়েছে প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গোমতি বাজারে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী, অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী মানসিকতার চরম প্রকাশ এবং একই সাথে ৮ জুলাই ডিওয়াইএফ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

প্রেস ব্রিফিং থেকে গত ৮ জুলাই ডিওয়াইএফ প্রতিনিধি এবং স্থানীয় প্রশাসন ও বাঙালিদের প্রতিনিধি মাটিরাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুল হক ও গোমতি ইউনিয়নের মেম্বার মো: রফিকুল ইসলামের মধ্যে স্বাক্ষরিত ৭ দফা সমঝোতা মেনে চলা, মাটিরাঙ্গাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও তার সহযোগী সংগঠনের উপর চলমান রাজনৈতিক দমন-পীড়ন যেমন বেআইনী গ্রেফতার, শারীরিক নির্যাতন, হয়রানি, মিথ্যা মামলা প্রদান ইত্যাদি বন্ধ করা, গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকারের উপর প্রশাসনের হস্তক্ষেপ বন্ধ করা এবং গোমতিতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি প্রদান এবং ডিওয়াইএফ নেতা পঞ্চসেন ত্রিপুরার হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More