শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী গণসমাবেশ, জাতীয় কনভেনশনসহ কর্মসূচি ঘোষণা

0

ঢাকা ।। প্রগতিশীল ছাত্র, যুব ও নারী সংগঠনের প্লাটফর্ম ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরদ্ধে বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে ঢাকার শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১) বিকালে এই গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

গণসমাবেশের ব্যানার শ্লোগান ছিল “পাহাড় ও সমতলে অব্যাহত ধর্ষণ-নিপীড়ন-বিচারহীনতা রুখে দাঁড়াও, ধর্ষণের মদদদাতাদের রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত কর”।

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) নিজস্ব ব্যানার নিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশে যোগ দেয়।

সমাবেশ থেকে ধর্ষণ ও বিচারহীনতা বিরোধী জাতীয় কনভেনশনসহ জেলায় জেলায় সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজউল্লাহর সঞ্চালনায় সমাবেশের শুরুতেই চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিবেশনায় ধর্ষণবিরোধী গান, নাচ ও কবিতা পরিবেশন করা হয়।

এরপর সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্সের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দিলরুবা নুরী, সিপিবি নারী সেলের সংগঠক অ্যাডভোকেট মাকসুদা আক্তার লাইলী, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, নারী সংহতির সংগঠক অপরাজিতা চন্দ, চারণ সংস্কৃতিক কেন্দ্রের সংগঠক জাকির হোসেন, প্রীতিলতা ব্রিগেডের সংগঠক আসমানী আশা, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সংগঠক উর্মী জ্যোতি পাল। এছাড়া হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নীতি চাকমা ও ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রমোদ জ্যোতি চাকমা সমাবেশে উপস্থিত থেকে সংহতি প্রকাশ করেছেন।

সমাবেশে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ধর্ষণ আলাদা একটি বিষয় নয়।  ধর্ষণ একটি যৌন সন্ত্রাস। যারা ধর্ষণের অপরাধে অপরাধী তারা কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতাবান। তারা ক্ষমতাশালী লোকজনের সাথে যুক্ত থেকে সেই ক্ষমতার জোরে জমি দখলসহ চাঁদাবাজি এবং যৌন নিপীড়ন ঘটায়।

তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের উদাহারণ দিয়ে বলেন, পাহাড়ে সেনাবাহিনী নিয়োজিত থাকার পরও ধর্ষণ হচ্ছে, জমি দখল হচ্ছে। তার একটাই কারণ হচ্ছে এসব অপরাধীরা ক্ষমতাশালী গোষ্ঠীর সাথে আঁতাত রেখে এসব কর্মকাণ্ড করছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের একটি পরিসংখ্যান পাই। আমাদের মনে রাখতে হবে এই পরিসংখ্যান বাস্তব যে চিত্র তার খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ। আজকের নিরাপত্তার জন্য অনেকে হিজাব পরছেন, বোরকা পরছেন। তারা ভাবছেন এটি পরলে আমরা নিরাপদ থাকতে পারব। কিন্তু দেখা যাচ্ছে হিজাব পরেও নিরাপত্তা আনা যাচ্ছে না। আজকে ঘরের মধ্যেও ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। ধর্ষণের জন্য ঘর বাহির বা পোশাক আসল কারণ নয়; আসল কারণ হচ্ছে ধর্ষকদের ক্ষমতা।

আনু মুহাম্মদ বলেন, একজন গার্মেন্টস এর নারী মালিক এবং নারী শ্রমিক, তাদের দুজনের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। কিন্তু সমাজে নিপীড়নের যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাতে তারা এই জায়গায় একইভাবে নিপীড়িত। মালিক যতটা নিপীড়িত, শ্রমিক আরও বেশি নিপীড়িত। বাঙালি নারী যেমন নিপীড়িত, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারী আরও বেশি নিপীড়িত। তাই আজকে এই আন্দোলনকে সাংগঠনিকভাবে আরও বেশি জোরদার করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের বিচার ব্যবস্থার যে বেহাল দশা, এতে যদি কেউ ধর্ষণের শিকারও হয়, সে আরও ১০ বার লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়েই বিচার না চেয়ে এড়িয়ে যায়। অন্যদিকে অভিযুক্তরা পুলিশ, আদালত, আইনের ক্ষমতাবলে ভয় দেখিয়ে বা আপোষ করে শাস্তি থেকে বেঁচে যায়।

তিনি ধর্ষণ-নিপীড়ন বিষয়ে রাষ্ট্রের জবাবদিহি নিশ্চিত করা দরকার মন্তব্য করে বলেন, ‘তবে রাষ্ট্রের দিকে চেয়ে বসে থাকলে চলবে না। তাদের একটা শক্তি আছে, সেই শক্তি দিয়ে তারা এইসব ঘটনার মদদ দেয়। জনগণকে তার পাল্টা সামাজিক রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে’।

তিনি বলেন, একটা সমাজ কতটা সভ্য সেটা নির্ধারিত হয় সে সমাজ নারীকে কতটা নিরাপদে রাখতে পারছে। নারী যদি নিরাপদ হয় তাহলে গোটা সমাজ নিরাপদ থাকতে পারে। তাই পুরুষদেরকে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।

ধর্ষণবিরোধী এই আন্দোলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই আন্দোলন অন্য আন্দোলনের সঙ্গে মিলিয়ে ফেললে হবে না। সব রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনকে সংগঠিত করে সারাদেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে। সর্বোপরি নারীদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।

তিনি আন্দোলন, খেলাধুলাসহ সকল ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ও সক্রিয়তা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে লেখা, গান, কবিতা, মিছিল, মিটিং ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচারণা জোরদার করার আহ্বান জানান।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা অমল ত্রিপুরা বলেন, সারাদেশে এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নিত্য নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে জনগণের অধিকার খর্ব করে রেখেছে। ফলে দেশে ধর্ষণ-খুন-গুম-হত্যা ও অপহরণের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

তিনি সমতলের চেয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বহুগুণ বেশি নিপীড়ন জারি রাখা হযেছে উল্লেখ করে বলেন, সেখানে যুগ যুগ ধরে সেনাশাসন জারি রেখে রাতে-বিরাতে তল্লাশির নামে হয়রানি, অন্যায় গ্রেফতার, নারী ধর্ষণসহ নানা নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।

১৯৯৬ সালের ১২ জুন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমাকে সেনাবাহিনীর কমাণ্ডার লে. ফেরদৌস ও তার গংরা অপহরণ করেছিল। দীর্ঘ ২৫ বছর হতে চললেও এখনো তার কোন হদিস আমরা পাইনি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার আজও হয়নি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে সাংগঠনিক কাজ শেষে ঢাকায় আসার পথে ইউপিডিএফের সংগঠক মাইকেল চাকমাকে তুলে নিয়ে গুম করা হয়েছে। তার খোঁজও আমরা এখনো পাইনি। তাকে খুঁজতে পুলিশের সহযোগিতা চাইলেও পুলিশ কোন সহযোগিতা প্রদান করেনি।

২০১৮ সালে রাঙামাটির বিলাইছড়িতে বাড়ি তল্লাশির নামে সেনা সদস্য কর্তৃক দুই মারমা কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। এ ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে প্রতিবাদ দেখা দেয়। কিন্তু এ ঘটনার বিচার তো দূরের কথা তখন চাকমা রাণী য়েন য়েন সেই প্রতিবাদে সামিল হয়ে ভিকটিম নারীদের সহযোগিতা করতে গেলে সেনাবাহিনী কর্তৃক তাকে অপদস্ত করা হয়েছিল।

তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্টের উপর সরকারের গোপন নিষেধাজ্ঞার কথা তুলে ধরে বলেন, গত বছর খাগড়াছড়ি সদরের বলপিয়ে আদামে এক প্রতিবন্ধী পাহাড়ি নারীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের রক্ষা করতে ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্টে নেগেটিভ দেওয়া হয়েছে। অথচ পুলিশের হাতে আটক ঘটনায় জড়িত ৭ আসামি ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। এভাবে বহু ঘটনা আড়াল করে দোষীদের রক্ষা করা হয়। সমতলের কিছু কিছু ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষকের উপযুক্ত শাস্তি হওয়ার কোন নজির নেই।

তিনি নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিবাদী রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সাধারণ পাহাড়িদের বেআইনীভাবে গ্রেফতার করে নামে বেনামে মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে বন্দি করে রেখে চরম নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। আদালত থেকে জামিন পেলেও নতুন নতুন মামলায় জড়িত করে পূনরায় কারাগারে আটকে রাখা হচ্ছে। ’৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদাররা যেভাবে পূর্বপাকিস্তানের মুক্তিকামী জনগণের উপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে, বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামেও একই কায়দায় নিপীড়ন চালানো হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী নির্যাতন ছাড়াও ব্যাপকভাবে ভূমি বেদখলের ঘটনা ঘটছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্প্রতি বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠীর ভোগদখলকৃত হাজার একর জমি বেদখল করে সেখানে সিকদার গ্রুপ ও সেনাবাহিনী মিলে একটি পাঁচতারকা হোটেল নির্মাণ করা হচ্ছে। এ মাধ্যমে সেখান থেকে ম্রোদের উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে চিম্বুক পাহাড়ে হোটেল নির্মাণ বন্ধের দাবি জানান।

তিনি ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’র উত্থাপিত ৯ দফা দাবি মেনে নেয়া, কল্পনা চাকমা অপহরণ ও সোহাগী জাহান তনু, সবিতা, তুমাচিং, উমাচিং সহ পাহাড় ও সমতলে যেসব ধর্ষণ-হত্যা ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার, পার্বত্য চট্টগ্রামে মেডিকেল রিপোর্টের উপর সরকার-রাষ্ট্রীয় বাহিনীর গোপন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া এবং গুমের শিকার হওয়া মাইকেল চাকমার দ্রুত সন্ধানের দাবি জানান।

নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, এই আন্দোলন সামাজিক আন্দোলন, এই আন্দোলন সাংস্কৃতিক আন্দোলন এবং রাজনৈতিক আন্দোলন। সরকার আল জাজিরার প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে যেভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, কথা বলছে, সেভাবে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলছে না, প্রতিবাদ করছে না। ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরকার কথা বলবে না, যা করতে হবে আমাদেরই করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে নাসির উদ্দিন প্রিন্স বলেন, ধর্ষণের যে মনস্ত্বত্ব এই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে, তার বদল ঘটাতেই এই আন্দোলন একটি বৃহত্তর আন্দোলনের রূপ নেবে। প্রতি জেলায় জেলায় মানুষকে সংগঠিত করতে হবে, মানুষের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। সেই লক্ষ্যে ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরূদ্ধে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সামনে।

সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, দেশে একটি ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় আসীন রয়েছে। তারা ক্ষমতা প্রয়োগ করে অনবরত ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে। সরকারের তাঁবেদাররাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধর্ষণ ও নিপীড়নের সাথে যুক্ত হয়ে আছে।

সমাবেশ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিসহ ধর্ষণ, নিপীড়ন ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

সমাবেশের সভাপতি নাসির উদ্দিন প্রিন্স জেলায় জেলায় ধর্ষণবিরোধী সমাবেশ, বিভাগীয় শহরে ধর্ষণবিরোধী কনভেনশন এবং আগামী মে মাসে ধর্ষণ ও বিচারহীনতা বিরোধী জাতীয় কনভেনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-এর ৯ দফা দাবি হচ্ছে- ১। সারাদেশে অব্যাহতভাবে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার সাথে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে; ২। পাহাড়-সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সকল প্রকার যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে; ৩। হাইকোর্টের নির্দেশানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতন বিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সিডো সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সকল আইন ও প্রথা বিলোপ করতে হবে; ৪। ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-১৫৫ (৪) ধারাকে বিলোপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে; ৫। অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ট্রাইবুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সকল মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করতে হবে; ৬। তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; ৭। ধর্মীয়সহ সকল ধরণের সভা-সমাবেশে নারী বিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে। পর্ণোগ্রাফি বন্ধে বিটিআরসি’র কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। মাদকব্যবসার হোতাদের গ্রেফতার করতে হবে, মাদকাসক্তি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে; ৮। পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক যে কোন প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করতে হবে ও ৯। গ্রামীন সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More