শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের

0

ঢাকা ।। দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে অবিলম্বে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনসমূহ।

শনিবার (২৯ মে ২০২১) বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা এসব দাবি করেন।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানার সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজনের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি ইকবাল কবীর, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রিপন জ্যোতি চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিখা পেরেগো, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় তথ্য প্রচার সম্পাদক তাউফিকা  প্রিয়া ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মুক্তা বাড়ৈ প্রমুখ।

সমাবেশে রিপন জ্যোতি চাকমা বলেন, দেড় বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে এবং মাদক,পর্ণোগ্রাফিসহ নানা অনৈতিক ও অপরাধমূলক  কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। গ্রামে গঞ্জে শিক্ষার্থীরা বাল্য বিবাহের শিকার হয়ে শিক্ষাজীবন থেকে ঝড়ে পড়ছে।

তিনি আরো বলেন, এই করোনা মহামারিকালেও সরকার তার ফ্যাসিস্ট কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী মতকে দমিয়ে রাখতে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষকে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামেও রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক ক্যাম্প স্থাপন, পর্যটন স্পট নির্মানসহ নামে বেনামে পাহাড়িদের ভূমি বেদখল ব্যাপকহারে চলছে এবং প্রতিনিয়ত পাহাড়ি জনগণের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে।

তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে সারাদেশে চলমান শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে পাবর্ত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সরকারের অব্যাহত অপতৎপরতা বন্ধের দাবি জানান।

ফয়েজ উল্লাহ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর এতে যে সমস্যা সৃষ্টি হবে তার সম্ভাব্য সমাধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি করেনি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারগুলোর এমন অবস্থা যে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে সেখানে তাকে ভর্তি করানো সম্ভব নয়।  

ইকবাল কবির বলেন, আমরা এক মজার দেশে বসবাস করছি। যেখানে সবকিছুর জন্য আন্দোলন করতে হয়। পরীক্ষার জন্য, পরীক্ষা পেছানোর জন্য, পরীক্ষা বন্ধ করার জন্য, ক্লাস চালু করার জন্য আন্দোলন করতে হয়।

আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, শিক্ষামন্ত্রী কয়েকদিন পরপর প্রেস ব্রিফিংয়ে আসছেন আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের তারিখ ঘোষণা করে যাচ্ছেন। কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন না। কিন্তু এদিকে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

মিতু সরকার বলেন, করোনায় দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের জীবন এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ধ্বংসের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে না পারলে অতল গহ্বরে তারা হারিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে মাসুদ রানা বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বারবার তার বক্তব্যের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়িয়েছে। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীরা কী ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে তার কোনো ব্যাখ্যা উপস্থাপন করতে পারেননি তিনি।

সমাবেশে থেকে বক্তারা, অবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার রোডম্যাপ ঘোষণা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্রুত টিকা দেওয়া ও তাদের স্বাস্থ্যবিমা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।’

সমাবেশে শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে শাহবাগে প্রদক্ষিণ করে আবার একই স্থানে এসে শেষ হয়।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More