সংখ্যালঘু জাতি সম্পর্কে সংবিধান সংশোধন কমিটির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে ইউপিডিএফ
ডেস্ক রিপোর্ট, সিএইচটিনিউজ.কম
দেশের সংখ্যালঘু জাতি সম্পর্কে সংবিধান সংশোধন কমিটির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় সদস্য উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা আজ ১৬ মার্চ, বুধবার, এক বিবৃতিতে বলেছেন, কমিটির কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বক্তব্য তথা কমিটির সিদ্ধান্ত সারা দেশের সংখ্যালঘু জাতিগুলোর মতো পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকেও হতাশ ও ক্ষুদ্ধ করেছে।
তিনি “আদিবাসী” হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া না দেয়া বিষয়ে অহেতুক ও কৃত্রিম বিতর্ককে দেশের সংখ্যালঘু জাতিগুলোকে তাদের ভূমি ও স্বায়ত্তশাসনের ন্যায়সঙ্গত সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেন।
ইউপিডিএফ নেতা সংবিধান সংশোধন কমিটির সিদ্ধান্তকে আওয়ামী লীগ সরকারের চরম অসাধুতা, নীতিহীনতা ও প্রতারণামূলক আখ্যায়িত করে বলেন, “বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী থেকে সবাই এতকাল সংখ্যালঘু জাতিগুলোকে তথাকথিত ‘আদিবাসী‘ হিসেবে উল্লেখ করে এসেছেন। অথচ আজ যখন এই সব অধিকারহারা বঞ্চিত জাতিগুলোকে তাদের ন্যায্য অধিকার দেবার প্রশ্ন সামনে এসে পড়েছে তখন তারা তাদের পূর্বের অবস্থান থেকে সরে এসেছে এবং ‘আদিবাসী‘ শব্দটির মনগড়া ও একপেশে ব্যাখ্যার আড়ালে লুকোতে চাইছে৷ এর মাধ্যমে এটাই প্রমাণ হয় যে, এ সরকারও পূর্বের বিএনপি-জামাত জোট সরকারের মতো সংখ্যালঘু জাতিগুলোকে তাদের ন্যায্য অধিকার দেয়ার পরিবর্তে তাদেরকে চিরকাল অধিকার-বঞ্চিত ও পদানত রাখতে চায়।“
উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা গত ৪ সেপ্টেম্বর সংবিধান সংশোধন বিষয়ক সংসদীয় বিশেষ কমিটির কাছে ইউপিডিএফ-এর দেয়া ৬ দফা সংশোধনী প্রস্তাব মেনে নিয়ে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর ভূমি ও স্বায়ত্তশাসনের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানান।
১৯৭২ সালের সংবিধানে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর জাতিসত্তার স্বীকৃতি ও অধিকার না দিয়ে বাঙালি জাতি হিসেবে তাদের পরিচিত হতে বাধ্য করার যে গুরুতর ঐতিহাসিক ভুল হয়েছিল, দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর পর সংখ্যালঘু জাতিগুলোর জাতিগত পরিচয় ভুলভাবে সংবিধানে সনি্নবেশিত করে যাতে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করা না হয় সরকারের কাছে সেই অনুরোধ করেন ইউপিডিএফ নেতা।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার সংবিধান সংশোধনী কমিটির সভা শেষে কমিটির কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, “আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের দাবি আছে। কিন্তু এ দাবির ক্ষেত্রে কমিটির সম্পূর্ণ ভিন্নমত রয়েছে। কারণ, বাংলাদেশ একটি প্রাচীন সভ্যতার দেশ। আমরা হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্যের জাতি। আমাদের এখানে কোন ঔপনিবেশিক শাসন ছিল না। এমনকি মধ্যযুগেও না। তাই অস্টেলিয়া, আমেরিকায় যে অর্থে আদিবাসী বোঝায়, আমাদের এখানের উপজাতিরা তেমন নয়। তাই ক্ষুদ্র জাতিসত্তা হিসেবে বাংলাদেশি নাগরিকত্বের মাধ্যমেই তাদের স্বীকৃতি দেওয়া হবে।’’