সন্তু গ্রুপের অস্ত্র সংগ্রহে প্রধান ভরসা করুণালংকার ভিক্ষু
নিরাপত্তা বিশ্লেষক, সিএইটিনিউজ.কম
জনসংহতি সমিতির সন্তু গ্রুপের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহে যিনি অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেন তিনি হলেন দিল্লীতে অবস্থানরত করুণালংকার ভিক্ষু।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র মতে, কিছু দিন আগে তিনি সন্তু গ্রুপের জন্য ৪১টি গ্রেনেড সংগ্রহ করে দেন। আসামের বোডো গেরিলাদের কাছ থেকে এগুলো ক্রয় করা হয়। আসাম-ত্রিপুরা সীমান্তের চুরাবাড়ি দিয়ে গ্রেনেডগুলো নিয়ে এসে তিনি নিজে সরাসরি সেগুলো সন্তু গ্রুপের লোকজনের হাতে তুলে দেন। এজন্য তাকে বিভিন্ন স্তরে নিরাপত্তা বাহিনীকে ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করতে হয়েছে।
গত বছর, অর্থাৎ ২০১৪ সালে তিনি সন্তু লারমার কাছ থেকে ৫০টি গ্রেনেড সরবরাহের জন্য টাকা নিয়েছিলেন, কিন্তু সরবরাহ করেন মাত্র ৪টি। বোডো গেরিলারা গ্রেনেডগুলো দেয়নি বলে বাকি টাকাগুলো তিনি মেরে দেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের একজন শ্রদ্ধাবান ভিক্ষু নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএইচটিনিউজকে বলেন, ‘করুণালংকার রংবস্ত্র পরিধান করলেও প্রকৃত অর্থে ভিক্ষু নন। সে নিজেকে জুম্ম ন্যাশন্যাল আর্মির সহসভাপতি ও সন্তু লারমার পর তার অবস্থান বলে দাবি করেন এবং সন্তু লারমার সশস্ত্র সদস্যদের জন্য অস্ত্র ও গোলাবরুদ সংগ্রহ করার কাজে জড়িত থাকার জন্য গর্ব করেন।’
তিনি আরো বলেন, বৌদ্ধ ধর্মে কয়েকটি পেশাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদি কোন ভিক্ষু প্রাণী হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র সংগ্রহ করে তখন তার পরিণতি হবে নরকে। অঙ্গুলীমালের মতো নিজেকে সংশোধন না করলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ।
অন্য একজন ভিক্ষু নিরাপত্তার স্বার্থে নাম গোপন রাখার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের উচিত অস্ত্র চোরাচালান বন্ধ করা ও করুণালংকার ভিক্ষুসহ অস্ত্র চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা, কারণ তাদের সরবরাহকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে নিরীহ লোকজনকে খুন করা হচ্ছে।
তিনি সরকার ও সেনাবাহিনীর দালাল সন্তু গ্রুপকে সহযোগীতা না করার জন্য ভারতীয় বিদ্রোহীদের প্রতিও আহ্বান জানান।
নীচের ছবিগুলোর মাধ্যমে সন্তু গ্রুপের পক্ষ হয়ে করুণালংকার ভিক্ষুর অস্ত্র সংগ্রহের প্রমাণ পাওয়া যায় :
অস্ত্র সংগ্রহ বিষয়ে দিল্লীতে জেএসএস সহ সভাপতি ও রাঙামাটি আসনের এমপি ঊষাতন তালুকদারের সাথে আলাপ করছেন করুণালংকার ভিক্ষু।
করুণালংকার ভিক্ষু অস্ত্র সংগ্রহের জন্য আসাম যেতে নয়া দিল্লীর ইন্দিরা গান্ধী এয়ারপোর্টে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স এর বিমানে ওঠার আগ মুহুর্তে।
সন্তু লারমার সাথে সোন্যক চাকমা। করুণালংকার ভিক্ষুর সাথেও (উপরের ছবিতে) তাকে দেখা যাচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স এর বিমানটির ভেতরে করুণালংকার ভিক্ষু।
করুণালংকার ভিক্ষু ৪১টি গ্রেনেড বহনকারী মাইক্রোবাসটির সামনে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছার আগে করুণালংকার ভিক্ষুর সেলফি।
করুণালংকার ভিক্ষু ত্রিপুরার গণ্ডাছড়ার একটি গ্রামে।
গ্রেনেডগুলো সন্তু গ্রুপের হাতে তুলে দিতে করুণালংকার ভিক্ষু ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বেড়ার একটি গেটে। ছবিতে বিএসএফ সদস্যদেরকে গেট খুলে দিতে ও বেড়ার অপর পাশে সন্তু গ্রুপের লোকজনকে অপেক্ষমান দেখা যাচ্ছে।
রেবাতা ভান্তে। করুণালংকার ভিক্ষুর সহকারী। তিনি ভারতের আসামে বসবাস করেন।
————————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।