খাগড়াছড়িতে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা

সরকারের পরিকল্পনায় বাঘাইছড়িতে হত্যাকাণ্ড ও চট্টগ্রামে তিন নেতাকে আটক করা হয়েছে

0

খাগড়াছড়ি : রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অংশ হিসেবে সরকারের পরিকল্পনায় বাঘাইছড়িতে ইউপিডিএফ’র তিন সদস্যকে হত্যা ও চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও পিসিপি’র তিন নেতাকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

“পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ কর” এই শ্লোগানে বাঘাইছড়িতে সংস্কারপন্থী জেএসএস সন্ত্রাসী কর্তৃক তিন  ইউপিডিএফ সদস্যকে হত্যা ও চট্টগ্রামের ডিবি পুলিশ কর্তৃক ডিওয়াইএফ ও পিসিপি’র তিন নেতাকে আটকের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত  বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ অভিযোগ করেন।

আজ মঙ্গলবার (২৯ মে ২০১৮) দুপুর দেড়টায়  বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম(ডিওয়াইএফ) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর খাগড়াছড়ি জেলা শাখার উদ্যোগে খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভরস্থ ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নারাঙহিয়া রেডস্কোয়ার হয়ে উপজেলা পরিষদ এলাকা প্রদক্ষিণ করে স্বনির্ভর বাজারের শহীদ অমর বিকাশ সড়কে এসে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি বরুন চাকমা, সাধারণ সম্পাদক রতন স্মৃতি চাকমার ও পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, গতকাল সকাল ৭টা দিকে বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকের করল্যাছড়িতে সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসী কর্তৃক ইউপিডিএফ’র তিন সদস্যকে গুলি করে হত্যা এবং দিবাগত রাত ২টার দিকে চট্টগ্রামে নগরীতে ডিবি পুলিশ কর্তৃক গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সুকৃতি চাকমা ও বন্দর থানা শাখার সভাপতি ক্লান্তময় চাকমা এবং পিসিপি মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক জিকো চাকমাকে বিনা ওয়ারেন্টে আটক কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অংশ হিসেবে সরকারের পরিকল্পনায় এসব হত্যা ও আটকের ঘটনা ঘটেছে।

তারা আরো বলেন, জেএসএস সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস-অরাজকতা সৃষ্টি করলেও প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। উপরন্তু তাদেরকে সেনাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে। তারা বলেন, সন্ত্রাসীরা খাগড়াছড়ি শহরের মধুপুর, তেঁতুলতলায় প্রকাশ্যে সশস্ত্রভাবে অবস্থান করে খুন-খারাবিসহ এলাকার জনগণের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করলেও প্রশাসন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। গত ২০ থেকে ২২ মে পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা স্বনির্ভর বাজারের পশ্চিমে সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান নিয়ে এলাকার জনগণকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করার ঘটনা প্রশাসনকে জানানো হলেও প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেছে।

সরকার সেনাবাহিনীকে দিয়ে সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, ইউপিডিএফ নেতা মিঠুন চাকমাসহ ডজনের অধিক নেতা-কর্মী-সমর্থককে হত্যার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরলেও তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। অথচ কোন মামলা না থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রামে যুব ফোরাম ও পিসিপি’র তিন নেতাকে রাতের আঁধারে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আটক করা হয়েছে।

বক্তারা সরকার-সেনা-প্রশাসনের এসব কর্মকাণ্ডে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধের আহ্বান জানান। অন্যথায় জনগণ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে তখন সকল পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায়ী থাকতে হবে বলে তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বক্তারা অবিলম্বে বাঘাইছড়িতে তিন ইউপিডিএফ সদস্যকে হত্যাকারী সংস্কারপন্থী পেলে-সুদর্শন গংদের গ্রেফতার ও চট্টগ্রামে আটক তিন ছাত্র-যুব নেতাকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
——————–
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More