সাজেকের মাচলং থানা প্রত্যাহারের দাবিতে এলাকাবাসীর স্মারকলিপি

0
বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি
সিএইচট নিউজ.কম
সাজেক : রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের নব নির্মিত মাচলং থানা প্রত্যাহারের দাবিতে পুলিশ সুপারের বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে এলাকাবাসী। গত ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার তারা এ স্মারকলিপি দেয়।এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গোবিন্দ হেডম্যান, এগুজ্জেছড়ি গ্রামের কার্বারী নতুন জয় চাকমা, সাজেক ইউনিয়নের মেম্বার উদয়ন চাকমা ও বিলাস চাকমা পুলিশ সুপারের বরাবরে স্মারকলিপি পৌঁছে দেন।

স্মারকলিপিতে তারা অভিযোগ করে বলেন, অত্র এলাকায় পুলিশ থানা স্থাপনের পূর্বে এলাকাবাসীর মতামত নেয়া হয়নি। এমনকি এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় মুরুব্বীদেরকেও বিষয়টি জানানো হয়নি। স্থানীয়দের মতামত ব্যতিরেকে উক্ত থানা উপর থেকে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।

স্মারকলিপিতে তারা সাজেক এলাকায় থানা স্থাপনের যৌক্তিক কোন কারণ বা প্রয়োজনীয়তা নেই উল্লেখ করে বলেন, এখানকার এলাকার জনসাধারণ খুবই সহজ সরল এবং অত্যন্ত নিরীহ। এখানে আইন শৃংখলা জনিত কোন সমস্যা নেই; ফৌজদারী অপরাধ, অসামাজিক কার্যকলাপ কিংবা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘটিত হয় না বলেই চলে। ছোটখাটো সামাজিক সমস্যা হলে তা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মিলে মীমাংসা করা হয়। কাজেই এই এলাকায় থানা স্থাপনের কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। প্রয়োজন ছাড়া অযথা স্থানা স্থাপন জনগণের করের টাকা শ্রাদ্ধ ছাড়া কোন কিছুই নয়।

নিরীহ জনসাধারণকে আর্থিক-মানসিকসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে মাচলং এলাকায় থানা স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে তারা বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আজিজুর রহমান স্থানীয় গণ্যমান্য মুরুব্বীদেরকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন যে, কাউকে আটক করার পূর্বে স্থানীয় মুরুব্বীদের পরামর্শ-মতামত নেবেন। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে ১৯ সেপ্টেম্বর বিনা ওয়ারেন্টে পিন্টু ত্রিপুরা নামে একজনকে পুলিশ আটক করে। এছাড়া পিন্টু ত্রিপুরাকে থানা হতে মুক্তির ব্যাপারে যারা উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলে থানা কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি।

স্মারকলিপিতে হয়রানির আশংকা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা বলেন, এই অবস্থায় মাচলং থানার হয়রানিমূলক তৎপরতা নিয়ে এলাকাবাসীর উদ্ধেগ-উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে নিপীড়ন-নির্যাতন আরো বৃদ্ধি পাবে বলে জনমনে ব্যাপক ও যৌক্তিক আশংকা বিরাজ করছে।

স্মারকলিপিতে তারা অচিরেই মাচলং-এ স্থাপিত পুলিশ থানাটি প্রত্যাহারের দাবি জানান।

স্মারকলিপিতে সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা, ফুলেশ কার্বারী, ৯নং গ্রামের কার্বারী কোকিল ত্রিপুরা, ৭নং গ্রামের কার্বারী দয়াল ত্রিপুরা, মিলন পাড়া কার্বারী নীল বরণ চাকমা, বিহার পাড়া কার্বারী রিবস মোহন চাকমা, রেতকাবা গ্রামের কার্বারী জ্ঞানময় চাকমা, এমএসএফ পাড়া কার্বারী গোবিন্দ চাকমা, সাজেক ইউনিয়নের মেম্বার জ্যোৎস্না রাণী চাকমা, গঙ্গারাম গ্রামের কার্বারী জ্যোতিলাল চাকমা সহ এলাকার ১০৫ জন মুরুব্বী, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী স্বাক্ষর করেন।

প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে স্মারকলিপির কপি অনুলিপি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের প্র্রতিমন্ত্রী, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক, বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান-এর বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More