সাজেকে গণজমায়েতে বক্তারা: যেভাবেই হোক সাজেক রক্ষা করতে হবে

0

সিএইচটিনিউজ.কম
Sajek prgm4, 19.02.2015সাজেক: ‘নানা জায়গা থেকে বিতাড়িত ও বাস্তুচ্যুত হয়ে আমরা সাজেকে এসেছি। এই সাজেক এলাকা বাদে আর আমাদের অন্য কোথাও যাবার জায়গা নেই। যেভাবেই হোক আমাদের সাজেককে রক্ষা করতে হবে।’ সাজেক রক্ষার লক্ষ্যে গণপ্রতিরোধের ৫ম বার্ষিকী উপলক্ষে  বৃহস্পতিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০:৪৫টায় গঙ্গারাম দোর রেজি: প্রাথমিকক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আয়োজিত বিশাল গণজমায়েত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। উজো বাজার রক্ষা কমিটির ব্যানারে আয়োজিত এ গণজমায়েতে ৭ শতাধিক লোক অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশ শুরুর আগে সকাল সোয়া ৮টায় করেঙাতলী রাস্তার পাশে ২০১০ সালের ১৯ -২০ ফেব্রুয়ারী এক সেটলার হামলায় শহীদ লক্ষ্মী বিজয় ও বুদ্ধপুদি চাকমার স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে শহীদ পরিবারবর্গ, সাজেক এলাকাবাসী, সাজেক নারী সমাজ, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটি, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতৃবৃন্দ পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এরপর শহীদদের সম্মানে স্মৃতি সৌধের পাশে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।Sajek prgm3, 19.02.2015

উজো বাজার রক্ষা কমিটির সভাপতি জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটির সহ-সভাপতি বিমল কান্তি চাকমা ২০০৮ ও ২০১০ সালের হামলার ঘটনা স্মরণ করে বলেন, ‘আমরা অনেক নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছি। আগামীতে আমাদের প্রতিরোধ করেই জাতিসত্তার অস্তিত্ব ও ভূমি রক্ষা করতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, আমাদের দাবী মেনে নিয়েই আলোচনার ভিত্তিতে বাঘাইহাট বাজার খোলার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। কিন্তু তা না করে কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে ও গোপনে আঁতাত করে বাঘাইহাট বাজার খুলে দেয়ার যে কোন প্রচেষ্টা সাজেকবাসী মেনে নেবে না।

ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি কাজলী ত্রিপুরা বলেন, ‘গতবছর ১৬ ডিসেম্বর সেনা সহায়তায় সেটলাররা রাঙামাটির বগাছড়িতে আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। ঘটনার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে এলেও তারা হামলাকারী সেটলারদের পক্ষেই কথা বলেছেন।’ তিনি বলেন, সকল বঞ্চনা-বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে।

Sajek prgm1,19.02.2015সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেন, আমাদের জনগণের পার্টি ইউপিডিএফের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নানা জায়গা থেকে বিতাড়িত ও বাস্তুচ্যুত হয়ে আমরা সাজেকে এসেছি। এই সাজেক এলাকা বাদে আর আমাদের অন্য কোথাও যাবার জায়গা নেই। তিনি আরো বলেন, যেভাবেই হোক আমাদের সাজেককে রক্ষা করতে হবে।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক অংকন চাকমা সন্তু লারমার সমালোচনা করে বলেন, জনসংহতি সমিতি আন্দোলনে কিভাবে পালিয়ে যেতে হয় তা দেখিয়েছে, কিন্তু তার বিপরীতে ইউপিডিএফ সাজেক রক্ষার জন্য প্রতিরোধ আন্দোলনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে যে, নিজ বাস্তুভিটা রক্ষা করে কিভাবে অধিকার আদায় করে নিতে হয়।

এছাড়া সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক দেবদন্ত ত্রিপুরা, বান্দরবান প্রতিনিধি ছোটন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরূপা চাকমা। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিনয় কান্তি চাকমা ও পরিচালনা করেন রিপন চাকমা ও কিশোর চাকমা।

সমাবেশ স্থলের পাশে ১৯ – ২০ ফেব্রুয়ারি সেনা-সেটলার হামলার বিভিন্ন স্থির চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া সন্ধ্যায় উজো বাজার, মাচলং ও লাদুমনি বাজারে সাজেক হামলার উপর নির্মিত ‘পাহাড়ে আগুন জ্বলে’ ডুকুমেন্টারি ফিল্মটি প্রদর্শন করা হয়।
—————–

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More