সিও, আর্মিরা সব কিছু করছে, আমার চেয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার নেই: নানিয়াচর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
কাউখালি: নানিয়াচর জোনের সিও (কমান্ডিং অফিসার) ও আর্মিরাই সবকিছু করছে, আমার চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার নেই। আপনাদের নেতারাও ঠিক নেই।
এ কথাগুলো কাউখালি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও একই সাথে নানিয়াচর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফিয়া আক্তারের।
গতকাল বুধবার বিকেলে কাউখালি উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম চৌধুরী, কলমপতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যজাই মারমা ও ফটিকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ধন কুমার চাকমা নানিয়াচরের বুড়িঘাটে সেটলারদের ভূমি বেদখলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিষয়ে আলোচনা করতে তার কার্যালয়ে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
চেয়ারম্যানরা তাকে ভূমি বেদখল বন্ধ, আটককৃত নিরীহ গ্রামবাসীদের মুক্তি ও সেনাবাহিনীর হয়রানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান।
আফিয়া আক্তার তার অক্ষমতার কথা জানিয়ে তাদেরকে বলেন, তার কিছুই করার নেই। কারণ আর্মিরা এবং বিশেষত নানিয়াচর জোনের সিও লে. ক. ইমরান হামিদ সব কিছু করছেন।
নানিয়াচরে জনৈক নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন ‘আপনাদের নেতারাও ঠিক নেই।’ (অর্থাৎ তারাও সেনাবাহিনীর লেজুড়বৃত্তি করছে। এ কারণে আর্মিরা এসব করার সাহস পাচ্ছে।)
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার সেটলাররা বুড়িঘাটে পাহাড়িদের জমি বেদখল করতে যায়। পরে পাহাড়ি গ্রামবাসীরা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে সেটলাররা পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর তারা আর্মি প্রহরায় আবার ফিরে আসে এবং পশ্চিম হাতিমারায় শান্তিকামী বৌদ্ধ বিহারে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাত চালায়।
এ ঘটনায় নেতৃত্ব দেয় বুড়িঘাট পুনর্বাসন এলাকার ১৭ নং টিলার বাসিন্দা জাকির, খুদি মিঞা, হাসান, মনির, সাজ্জাদ ও খোরশেদ।
অপরদিকে আর্মিরা রামহরি পাড়ায় ব্যাপক তল্লাশী চালায় এবং সেখান থেকে আশুতোষ চাকমা (পিতা আনন্দ চাকমা) ও তার ছেলে বাস্তব চাকমাকে আটক করে। তবে গ্রামের নারীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে তাদেরকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
এলাকাবাসীর ধারণা পরিস্থিতি ঘোলা করে ফায়দা লোটার জন্য আর্মিরা পাহাড়িদের ভূমি বেদখল করতে সেটলারদের গোপনে মদদ দিচ্ছে। নানিয়াচরের সিও লে. ক. ইমরান হামিদ-এর সাম্প্রদায়িক মনোভাব ও পাহাড়ি বিদ্বেষ সর্বজন বিদিত। কয়েক দিন আগে তিনি এলাকার এক ইউপি চেয়ারম্যানকে জোনে ডেকে বলেছেন, তিনি যে কোন মূল্যে সেটলারদের স্বার্থ রক্ষা করবেন।
উল্লেখ্য বর্তমানে নানিয়াচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদটি খালি রয়েছে। নতুন কেউ দায়িত্ব গ্রহণ করার আগ পর্যন্ত কাউখালি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে যুগপৎভাবে নানিয়াচর উপজেলারও দায়িত্ব হয়েছে।
—————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।