সিন্দুকছড়িতে নিরীহ গ্রামবাসীর ঘর-বাড়ি ভেঙে দেয়ার প্রতিবাদে মাটিরাঙ্গায় বিক্ষোভ

0

মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি ।। গুইমারার উপজেলার সিন্দুকছড়ির ঠান্ডাছড়িতে নিরীহ গ্রামবাসির ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে দেওয়ার প্রতিবাদে এবং দোষী সেনা সদস্যদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত‍্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখা।

আজ বুধবার (৭ জুলাই ২০২১) বেলা ১১ টায় এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে ছাত্র পরিষদের মাটিরাঙ্গা উপজেলার সভাপতি অনিমেষ চাকমা বলেন, সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের উপর যেভাবে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে তা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। তারা তাদের ক্ষমতার দাপট দেখাতেই পাহাড়িদের উপর এমন অত‍্যাচার চালাচ্ছে। মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতি বিদ্বেষী এবং সুবিধা ও প্রমোশন লাভের জন্যে তারা কথিত সন্ত্রাস দমনের নামে সাধারণ পাহাড়ি গ্রামবাসীদের উপর নানা অত‍্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এলাকার সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে ছাত্র-যুবক সকলকে সচেতন ও সজাগ হয়ে তাদের অপরাধ জনসমক্ষে তলে ধরতে হবে এবং এমন অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় তাদের অত্যাচার থেকে কারোরই রেহায় মিলবে না।

গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা উপজেলার সভাপতি নন্দলাল ত্রিপুরা বলেন, সেনাবাহিনী কী রকম জুলুম চালাচ্ছে তা পাহাড়ের মানুষের সবারই জানা। দেশে মুক্ত মিডিয়া না থাকার ফলে পাহাড়ে নিত্য যে অত‍্যাচার, দমন চলছে তা মিডিয়ায় আসছে না। কারণ এখানে সেনাবাহিনী মিডিয়াকে কব্জায় রেখেছে, তাদের অনুমতি না নিয়ে মিডিয়া কোনও কিছু প্রচার করতে পারে না। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর অন্যায়-অবিচারের চিত্র সাহসের সাথে তুলে ধরার জন্য  মিডিয়া ও মিডিয়ায় নিয়োজিত সংবাদ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একটি অংশ। তবে কেন এখানে শাসন ভিন্ন হবে? আমরা তো সমতলে গেলে পাহাড় এবং সমতলের শাসন ব্যবস্থার বিরাট তফাৎ লক্ষ্য করি। সেখানে জনগণের উপর সেনাবাহিনীর কোন খবরদারি নেই, অত‍্যাচার তো দূরের কথা। তাহলে পাহাড়ে এত অত্যাচার-নিপীড়ন কেন?

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের গুইমারা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত ত্রিপুরা তিনি বলেন, পাহাড় জুড়ে সেনারা দুঃশাসন চালাচ্ছে, কারণ তারা অন্যায়, অপরাধ করলেও তাদের বিচার করা হয় না।  কল্পনা চাকমা অপহরণ, রমেল চাকমাকে হত্যা কিংবা সোহাগী জাহান তনুকে ধর্ষণের পর হত্যার বিচার বিচার আমরা পাইনি। তাই, আমাদের প্রশ্ন জাগে তাহলে অপরাধ করেও কী সেনা সদস্যদের দায়মুক্তি দেয়া হবে? তারা কী অপরাধী নয়? একই দেশের নাগরিক হিসেবে তাদেরকেও অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা অনুযায়ী শাস্তি দিতে হবে।

বক্তারা বলেন, সিন্দুকছড়িতে সেনাবাহিনী কর্তৃক যে নিরীহ গ্রামবাসীদের ঘর পুড়িয়ে ও ভেঙে দেয়া হয়েছে তার অবশ্যেই বিচার করতে হবে এবং এ ঘটনায় জড়িত সেনা সদস্যদের আইনের আ্ওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে।

সমাবেশে এলাকার মুরুব্বীগণও বক্তব্য রাখেন। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হরিশ ত্রিপুরা।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More