সেনাবাহিনীর প্রদত্ত কম্বল ফিরিয়ে দিয়েছেন দোবাকাবা ও নভাঙ্গা গ্রামবাসীরা

0

কাউখালী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি ।। জমি-বাগান জবরদখল করে ক্যাম্প স্থাপন ও সামাজিক বাঁধটি ব্যবহার করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে সেনাবাহিনীর প্রদত্ত কম্বল ফিরিয়ে দিয়েছেন কাউখালীর দোবাকাবা ও নভাঙ্গা গ্রামবাসীরা। গত ১৬ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী জোর করে কিছু লোকজনকে এসব কম্বল দিয়েছিল।

আজ মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর ২০২০) দুপুরের দিকে গ্রামবাসীরা কম্বলগুলো ফেরত দিয়ে আসেন।

তবে, গ্রামবাসীরা সেনাদের হেনস্থা ও মারধরের ভয়ে স্বশরীরে হাতে হাতে কম্বলগুলো ফেরত না দিয়ে তাদের (সেনাদের) দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে কম্বলের গাঁটগুলো রেখে দিয়ে এসেছেন।

ফেরত দেওয়া কম্বলের গাঁটে দু’গ্রামবাসী একটি চিরকুটও এঁটে দেন। যাতে লেখা ছিল-

“মাননীয়,
দোবাকাবা-নভাঙ্গায় অবস্থানরত কমান্ডার,
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

এই শীতের মৌসুমে আমাদেরকে কম্বল দিয়ে সাহায্য করতে চাওয়ার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ।

তবে দুঃখের সাথে মহোদয়কে বলতে হচ্ছে যে, আমরা বর্তমানে আপনাদের উক্ত ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ করতে অপরাগ। তাই জোরপূর্বক জমি দখল করে আমাদের এলাকায় সেনা ক্যাম্প স্থাপন এবং আমাদের জীবিকার জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণে বাধা প্রদানের প্রতিবাদে আমরা উক্ত ত্রাণ সামগ্রী ফেরত দিতে বাধ্য হচ্ছি।

আমরা আপনাদের উক্ত ত্রাণসামগ্রী নিতে পারি কেবল একটি শর্তে। আর সেই শর্ত হলো- আপনাদেরকে ক্যাম্প স্থাপন কাজ বন্ধ করে আমাদের এলাকা থেকে নিজ ক্যাম্পে ফিরে যেতে হবে।

তারিখঃ ২২ ডিসেম্বর ২০২০

ইতি
দোবাকাবা-নভাঙ্গা এলাকাবাসী।”

কম্বল ফেরত দিতে যাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক গ্রামবাসী বলেন, “ক্যাম্প স্থাপনের পর থেকে আর্মিরা আমাদের সামাজিক বাঁধটির পানি ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। যার দরুন গাছ বাঁশ বর্মাছড়ি বাজারে বিক্রি করতে পারছি না। ফলে ধার কর্জ করে সংসার চালাতে হচ্ছে। আমাদেরকে অসুবিধায় ফেলে তারা কোন মুখে আবার কম্বল বিতরণ করে? তাই তাদের দেওয়া কম্বল ঘৃণা ভরে ফেরত দিচ্ছি”।

উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর নভাঙ্গা দোকানে জড়ো হওয়া লোকজন, গরু চড়াতে যাওয়া লোকজন এবং পথচারীদের জোর করে নভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে গিয়ে রাঙামাটি থেকে আগত সেনাবাহিনীর সিও রফিকের নেতৃত্বে লোকদেখানো এসব কম্বল বিতরণ করা হয়েছিল।

মূলত দোবাকাবা-নভাঙ্গায় জমি দখল করে গত ২২ নভেম্বর হতে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের পর থেকে দু’ গ্রামবাসীর সামাজিক বাঁধের জলাশয়টির পানি ব্যবহারে বাধা প্রদানের ফলে গ্রামবাসীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসীদের এই অসন্তোষ প্রশমনের লক্ষ্যে সেদিন লোক দেখানো কম্বল বিতরণের আয়োজন করা হয়। এ নিয়ে ১৭ ডিসেম্বর সিএইচটি নিউজে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত/প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More