সেমুতাঙ গ্যাস পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে পাচারের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত
খাগড়াছড়ি প্র্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে পাচারের প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে। আজ ৪ ডিসেম্বর দুপুর ১:৩০টার সময় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের স্বনির্ভর মাঠে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা। অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলার সংগঠক রিকো চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আপ্রুসি মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কণিকা দেওয়ান, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য মিন্টু ত্রিপুরা ও খাগড়াছড়ি পৌর কাউন্সিলর মিলন দেওয়ান মনাঙ। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অর্পন চাকমা ও পরিচালনা করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পদক রেমিন চাকমা।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগামের গ্যস পার্বত্যবাসীদেরই সম্পদ। স্থানীয় জনগণের প্রবল আপত্তি ও প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে সরকার সেমুতাঙের গ্যাস চট্টগ্রামে সরবরাহ করছে। এটি গুরুতর অন্যায়, বৈষম্যমূলক ও উপনিবেশিক মানসিকতাদুষ্ট। বক্তারা সেমুতাঙের গ্যাস দিয়ে স্থানীয় চাহিদা পূরণের দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা আরো বলেন, সেমুতাঙ ছাড়াও সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের তেল-গ্যাস সহ সকল খনিজ সম্পদ লুণ্ঠনের ষড়যন্ত্র করছে। ইতিমধ্যে সরকার পার্বত্য চট্টগামে তেল-গ্যস অনুসন্ধানের জন্য বিদেশী কোম্পানীর সাথে চুক্তি করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে তেল-গ্যাস সহ সকল খনিজ সম্পদের সুফল ভোগের প্রথম ও প্রধান দাবিদার হচ্ছে এ এলাকার জনগণ। কাজেই পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে বঞ্চিত রেখে তেল-গ্যাস সহ সকল খনিজ সম্পদ বাইরে পাচার করা হলে এ এলাকার জনগণ তা কিছুতেই মেনে নেবে না। সরকার যদি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের দাবিকে অগ্রাহ্য করে সেমুতাঙের গ্যাস বাইরে পাচার অব্যাহত রাখে তাহলে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে বলে বক্তারা হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সপরে দল বলে জাহির করলেও আওয়ামী লীগ সরকারের মধ্যে পাঞ্জাবি শাসকগোষ্ঠীর ভূত চেপে রয়েছে। তাদের প্রতিটি কার্যকলাপই তা প্রমাণ দেয়। পাঞ্জাবিরা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সম্পদ পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার করত। বাংলার লোকদের প্রতি তাদের আচরণ ছিল বিমাতাসুলভ। সকল কিছুতে পাঞ্জাবিরা তাদের কর্তৃত্ব খাটাত, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর অন্যায় শাসন-শোষণ চালাত। একই কায়দায় বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। তাদের জায়গা-জমি বেদখল করছে। তাদের ন্যায্য সম্পদ থেকে বঞ্চিত করছে। এটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে সেমুতাঙ গ্যাস বাইরে পাচার বন্ধ করে এ গ্যাস দিয়ে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া বন্ধ করা ও সরকারী দমন-পীড়ন বন্ধ করার জোর দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে স্বনির্ভর মাঠ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে চেঙ্গী স্কোয়ার ঘুরে আবার স্বনির্ভর মাঠে এসে শেষ হয়।