স্বামী গাছ কাটার কাজে গেছে বলার পরেই উক্ত ব্যক্তি আমার পিছনে কাঁধে দু’হাত ধরে ঝাপটে ধরে

0

সিএইচটিনিউজ ডেস্ক: 
21764“আমার স্বামী গাছ কাটার কাজে গেছে বলার পরেই উক্ত ব্যক্তি আমার পিছনে কাঁধে দু’হাত ধরে ঝাপটে ধরে। ঝাপটে ধরা মাত্রই আমি ভয় পেয়ে চিৎকার, চেচামেচি করে দৌঁড়াতে থাকি এবং দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে লক্ষীছড়িমুখ বাজার পর্যন্ত চলে আসি।” এই ভয়ার্ত কথাগুলো বলেছেন রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের লক্ষীছড়ি মুখ গ্রামে গত ১৮ ফেব্রুয়ারী সেনা সদস্য কর্তৃক ধর্ষণ প্রচেষ্টার শিকার হওয়া ওই পাহাড়ি নারী (২৮)।  অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিএইচটি২৪.কমের কাছ তিনি এভাবে  ঘটনার বর্ণনা দেন। তার দেয়া ঘটনার বর্ণনা ও তার স্বামীর বক্তব্যটি সিএইচটি২৪.কমের সৌজন্যে এখানে হুবহু প্রকাশ করা হলো:

ভিকটিম: ঘটনাটি সংঘটিত হয় গত ১৮/০২/১৪ মঙ্গলবার। আমাদের ঘরটি গ্রাম থেকে একটু দূরে। আমি ঘরের কাজে একটু ব্যস্ত ছিলাম। আমার স্বামী তখন কাজ করতে বাইরে যায়। বেলা ১১:৩০/১২টার দিকে আর্মি ড্রেসের প্যান্ট ও লাল গেঞ্জি পড়া একজন সেনা সদস্য আমাদের ঘরে আসে। ঘরে এসে সে জিজ্ঞেস করে-তোমার স্বামী কোথায় গেছে? আমি বলি, আমার স্বামী গাছ কাটার কাজে গেছে। এ কথা বলার পরেই উক্ত ব্যক্তি আমার পিছনে কাঁধে দু’হাত ধরে ঝাপটে ধরে। ঝাপটে ধরা মাত্রই আমি ভয় পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে দৌঁড় দিতে থাকি এবং দৌঁড়ে দৌঁড়ে লক্ষীছড়ি মুখ বাজার পর্যন্ত চলে আসি। আমার চিৎকার চেঁচামেচি করে বাজারে আসা দেখে লোকজন একত্রিত হয়।  দৌঁড়ে আসার সময় আমি দেখতে পাই, আমার ঘরের বাইরে আর্মি ড্রেসের প্যান্ট ও আর্মি ড্রেসের হাফ হাতা গেঞ্জি পড়া আরেকজন লোক দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমি বাজারে পালিয়ে আসার পরে উক্ত দুইজন সেনা সদস্য গ্রামের কার্বারীসহ বাজারের লোকজনকে জানায় যে, আমরা জ্বালানী কাঠ সংগ্রহের জন্য এসেছি।

আলোচনার সূত্র ধরে ভিকটিমের স্বামী বলেন, ৩/৪ সপ্তাহ আগে আমি যখন বাড়ির বাইরে বারান্দায় চেয়ারে বসেছিলাম তখন ২ জন সেনা সদস্য (যারা ধর্ষণ প্রচেষ্টার সাথে জড়িত ছিল তারা) হেঁটে হেঁটে আমাদের বাড়িতে আসে। তখন তারা আমাকে দেখে চলে যায়। বোধ করি ১৮ ফেব্রুয়ারী ঘটনা সংঘটিত করার পেছনে তাদের পূর্ব পরিকল্পনা ছিল।

তিনি আরো বলেন, এত বছর ধরে আমরা উক্ত এলাকায় আছি, বেশ ক’জন সুবেদার , হাবিলদার ক্যাম্পে এসছিল। কিন্তু আগের সেনা সদস্যরা এভাবে ঘোরাফেরা করেনি। বর্তমানে সুবেদার, হাবিলদার সেনা সদস্যরা নানাভাবে এলাকার লোকজনকে বিরক্ত করে, নানা হয়রানি করে থাকে।  ঘটনার সাথে জড়িত সেনা সদস্যরা হলো সুবেদার(ওয়ারেন্ট অফিসার) কাদের ও হাবিলদার বাশার। ঘটনার পর নানা জনের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে উক্ত সেনা সদস্যদের শারিরীক বর্ণনা দিলে আমরা তাদের পরিচয় চিহ্নিত করতে পারি এবং নিশ্চিত হই যে, ধর্ষণ প্রচেষ্টার ঘটনার সাথে সুবেদার কাদের ও বাশারই জড়িত ছিল।

তারা নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দাবি করে বলেন, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হতে না পারে তার নিশ্চয়তা আমরা চাই। এছাড়া আর কোন নারী যেন এভাবে নির্যাতন, ধর্ষণ বা ধর্ষণ প্রচেষ্টার শিকার না হয় আমরা তার নিশ্চয়তা চাই।

[ভিকটিম ও তার স্বামীর বক্তব্যটি নেয়া হয় ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৪, বৃহস্পতিবার। বিশেষ কারণে তাদের নাম প্রকাশ করা হলো না।]

সৌজন্যে: সিএইচটি২৪.কম

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More