হামলা করে সিএইচটি কমিশনকে প্রতিহত করা যাবেনা- সুলতানা কামাল

0

সিএইচটিনিউজ.কম
হামলা করে পার্বত্য চট্টগ্রাম আর্ন্তজাতিক কমিশনকে (সিএইচটি কমিশন) প্রতিহত করা যাবেনা বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির কো-চেয়ার সুলতানা কামাল।

রাঙামাটিতে হামলার শিকার হয়ে নগরীতে ফেরার পর শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

v2_598839198সুলতানা কামাল বলেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসী, জঙ্গীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমরা যেভাবে সতর্ক থাকি, ভবিষ্যতে একইভাবে সাবধান থাকবো। কিন্তু কাজ চালিয়ে যাবো। হামলা করে কেউ আমাদের প্রতিহত করতে পারবে না।

হামলার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, সমঅধিকার আন্দোলন নামে একটি সংগঠনের নেত্রী নূরজাহান তাদের উপর হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। নূরজাহান শুরু থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম আর্ন্তজাতিক কমিশনের সদস্যদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলে লোকজন জড়ো করেন। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে হামলা শুরু হয়।

হামলার জন্য কারা দায়ী এমন এক প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলনসহ যে ৬টি সংগঠন আমাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল তারাই হামলার জন্য দায়ী। তবে আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, এরা তো সশস্ত্র জঙ্গীবাহিনী নয়। এরা কোত্থেকে এত শক্তি পেল ? পুলিশসহ প্রশাসন আমাদের অনেক সহযোগিতা দিয়েছে। তারা অনেক চেষ্টা করেও হামলাকারীদের নিবৃত্ত করতে পারেনি। তাহলে কি এদের পেছনে অনেক বড় কোনো শক্তি আছে ?

রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার নাম উল্লেখ করে ওই সংস্থার কার্যালয়ের পেছন দিক থেকে সুলতানা কামালদের গাড়িতে বড় বড় পাথর ছুঁড়ে হামলার সূত্রপাত হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তবে সংস্থাটি হামলার সঙ্গে জড়িত বলে মনে করেন না তিনি।

কেন, কি উদ্দেশ্যে তাদের উপর হামলা হয়েছে?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই। যারা আমাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল তারাই বিষয়টি বলতে পারবে।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক পন্থায় মতবিরোধ, মতানৈক্য কিংবা ভুল বোঝাবুঝি থাকলে তা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের অনেক পন্থা আছে। কিন্তু হামলাকারীরা কোনো পন্থাই মানতে চাননি।

সুলতানা কামাল বলেন, আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে যে চুক্তি হয়েছিল তার অগ্রগতি, কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে, বাস্তবায়নের পথে বাধা কোথায় এসব দেখতে সেখানে গিয়েছিলাম। প্রতিবার জনসংহতি সমিতি, ইউপিডিএফ, সমঅধিকার আন্দোলনসহ সব সংগঠনের সঙ্গে কথা বলি। এবারও সমঅধিকার আন্দোলনের সঙ্গে শুক্রবার বিকেলে আমাদের বসার কথা ছিল। আমরা বারবার তাদের সঙ্গে কথা বলে এ সময় নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু তারা বৈঠকে আসেননি। এমনকি কেন তারা বৈঠকে আসলেন না সেটিও জানাননি।
তিনি বলেন, রাঙামাটিতে যাবার সময় আমরা জানতে পারি আমাদের প্রতিহত করতে সেখানে অবরোধ আহ্বান করা হয়েছে। এরপর আমরা সমঅধিকারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাদের কোনো সাড়া পাইনি।

সুলতানা কামাল বলেন, আজ (শনিবার) সকালে আমরা পুলিশ পাহারায় রাঙামাটি শহরে যাবার সময় হোটেল থেকে বের হবার পরই আমাদের উপর হামলা হয়। আমাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়, অকথ্য ভাষায় ‍গালিগালাজ করা হয়। চালককে গাড়ি ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পুলিশ বহাল থাকা অবস্থায় আমরা বাধ্য হয়ে মোটেল পর্যটনের ভেতরে প্রবেশ করি।

তিনি বলেন, এরপর কোতয়ালি থানার ওসি আমাদের সঙ্গে দেখা করেন এবং স্কট দিয়ে আমাদের চট্টগ্রাম শহরে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করেন। কারণ আজ (শনিবার) চট্টগ্রামে এসে আমাদের সেনাবাহিনীর জিওসি’র সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের গাড়ি রওনা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র আক্রমণ শুরু হয়। বড় বড় পাথর আমাদের গাড়িতে ছুঁড়ে মারা হয়। গাড়ির সব গ্লাস ভেঙ্গে যায়।

তিনি বলেন, হামলায় কোতয়ালি থানার ওসি, গাড়িচালক এবং সিএইচটি কমিশনের সদস্য ইলিরা দেওয়ান মারাত্মক আহত হয়েছেন। কমিশনের অপর সদস্য সারা হোসেনের পুরো গায়ে কাঁচের গুড়া পড়েছে। ইফতেখারুজ্জামানের আঙ্গুলে মারাত্মক চোট পেয়েছেন। আমিসহ কম বেশি সবাই আহত হয়েছি।

একই সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের আরেক সদস্য প্রফেসর স্বপন আদনান বলেন, আমরা এবারসহ সপ্তমবার পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে যে শুধু পাহাড়িদের কথা বলি তা নয়, আমরা বাঙালিদের দুঃখদুর্দশার চিত্রও তুলে ধরি। আমাদের উপর যে হামলা হয়েছে তা দুঃখজনক।

সংবাদ সম্মেলনে সিএইচটি কমিশনের সদস্য খুশী কবির, ড. মো. ইফতেখারুজ্জামান, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ইলিরা দেওয়ান, হানা শামসও উপস্থিত ছিলেন।

খবর ও ছবি সৌজন্যে:  বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More