১৫ মার্চ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর অভিমুখে দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির পদযাত্রা
সিএইচটিনিউজ.কম
দীঘিনালা: বিজিবি ব্যাটালিয়ন অন্যত্র সরিয়ে নেয়া, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারকে নিজ জমিতে পুনর্বাসনের দাবিতে আগামী ১৫ মার্চ রবিবার বিজিবি ৫১ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটি। কর্মসূচি সফল করতে ইতিমধ্যে প্রচারপত্র বিলি ও বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করা হয়েছে।
পদযাত্রা কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে বিলি করা প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, দীঘিনালা উপজেলার ৪নং দীঘিনালা ইউনিয়নের যত্ন কুমার কার্বারী পাড়া ও শশী মোহন কার্বারী পাড়া থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্তৃক সম্পূর্ণ অন্যায় ও জোরপূর্বক উচ্ছেদ হওয়া ২১টি পাহাড়ি পরিবার গত ১০ মাস ধরে অনাহারে, অর্ধাহারে অনিশ্চিত এক ভবিষ্যৎ নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। গত বছর ১৪ মে দিবাগত রাত ৩টার দিকে বিজিবি’র ৫১ নং ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ১৪/১৫টি গাড়ি নিয়ে ২১ পরিবারের জমি দখল করে এবং তাদের তাড়িয়ে দেয়। বিজিবি সদস্যরা শুধু তাদেরকে নিজ বাস্তুভিটা থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ক্ষান্ত হয়নি। ১১১ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০ জন এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে দীঘিনালা থানায় হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এ হয়রানিমূলক মামলা থেকে এলাকার জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান, মৃত ব্যক্তি ও গণ্যমান্য মুরুব্বীরাও পর্যন্ত রেহাই পাননি। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলো নিরুপায় হয়ে এক কাপড়ে প্রথমে বাবুছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ও পরে বাবুছড়া ইউনিয়নের কৃষি অফিসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। বর্তমানে গাদাগাদি করে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরসহ ২১ পরিবারের মোট ৮৫ জন সদস্য বাবুছড়ার কৃষি অফিসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। এর মধ্যে ৪ জন কলেজ পড়–য়া ছাত্রী, ৯ জন হাইস্কুলের ছাত্র/ছাত্রী ও ৭ জন প্রাইমারী লেভেলের ছাত্র/ছাত্রী রয়েছে।
প্রচারপত্রে বলা হয়, উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলো সবাই ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী। ২০ দফা প্যাকেজ চুক্তির ভিত্তিতে তারা দেশে ফিরে এসেছিলেন। চুক্তি মোতাবেক তাদেরকে পুনর্বাসন না করে আবারো নিজ বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এ উচ্ছেদ কেবল অমানবিক নয়, দেশের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারেরও পরিপন্থি।
প্রচারপত্রে অভিযোগ করে বলা হয়, বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারের জমি ফিরিয়ে দেয়াসহ এর প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসীর তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান এবং অনেক মিটিং, মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোকে তাদের নিজ বাস্তুভিটা ফিরিয়ে দেয়া ও পুনর্বাসন করার জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। সরকারের এমন উদাসীনতা দেখে মনে হচ্ছে যেন উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারের সদস্যরা এদেশের নাগরিক নন।
এতে বলা হয়, সরকারের কাছে আবেদন নিবেদনে প্রতিকার না পেয়ে শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রিট আবেদন দাখিল করা হয়। বর্তমানে এই রিট মামলাটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এই অবস্থায়, দেশের প্রচলিত ও প্রথাগত কোন আইনকে বিজিবি পরোয়া করছে না। সম্পূর্ণ শক্তির জোরে ২১ পরিবারের বাস্তুভিটা বেদখল করে সেখানে স্থায়ী স্থাপনা নির্মান করা হচ্ছে।
প্রচারপত্রে পদযাত্রা কর্মসূচি সফল করার জন্য এলাকায় এলাকায় সংগঠিত হয়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দলে দলে যোগদান করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়েছে।
—————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।