১৮তম নান্যাচর গণহত্যা দিবস পালিত : পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের আহ্বান
নান্যাচর প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
রাঙ্গামাটি জেলার নান্যাচর উপজেলায় নান্যাচর গণহত্যা দিবসের ১৮তম বার্ষিকীপালিত হয়েছে। আজ ১৭ নভেম্বর সকাল ১১টায় উপজলা সদরের বিশ্রামাগার মাঠে একসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।শহীদদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠিতসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নান্যাচর থানা শাখারসভাপতি প্রিয়লাল খীসা।এতে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন পাহাড়িছাত্র পরিষদের রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি বিলাস চাকমা, হিল উইমেন্সফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা শাখার আহ্বায়ক যুথিকা চাকমা, পাহাড়ি ছাত্রপরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অংগ্য মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয়সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা, নান্যাচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণ খীসা, সাব্যেং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুপন চাকমা ও তরুণ সমাজসেবক তন্ময় তালুকদার।সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদেরনান্যাচর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক রিপন চাকমা এবং পরিচালনা করেন পিসিপিনান্যাচর কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা।
বক্তারা বলেন, ১৯৯৩সালের এই দিনে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নান্যাচর গণহত্যা সংঘটিত করা হয়।এতে ৩০ জন পাহাড়ি প্রাণ হারায় এবং কয়েক শত লোক আহত হয়।আজ ১৮ বছরঅতিক্রান্ত হলেও দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হযনি।
বক্তারাআরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার আদায়ের লড়াই সংগ্রামকে ধ্বংস করেদেয়ার লক্ষ্যে সরকার-সেনাবাহিনী নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে।পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত ভূমি বেদখলের মাধ্যমে পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকেউচ্ছেদের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, ১৯৯৭ সালে চুক্তি স্বারেরপর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত চলছে।আঞ্চলিক পরিষদেরচেয়ারে বসে সন্তু লারমা শাসক গোষ্ঠির জুম্ম দিয়ে জুম্ম ধ্বংসের নীতিবাস্তবায়ন করে চলেছে।বক্তারা অচিরেই এই সংঘাত বন্ধের জন্য সন্তু লারমাসহসংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সংঘাত কখনো জাতির জন্য মঙ্গলবয়ে আনতে পারে না। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইসংগ্রামকে বেগবান করতে হবে।সরকারের ভাগ করে শাসন করার নীতি পরিহার করেঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বক্তারা অবিলম্বে নান্যাচরগণহত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, পার্বত্যচট্টগ্রাম থেকে সেনাবহিনী প্রত্যাহারপূর্বক সেনা শাসনের অবসান, সেটলারদেরপার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসন, সংবিধানের পঞ্চদশসংশোধনী বাতিলপূর্বক সংখ্যালঘু জাতিসমূহের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, পার্বত্যচট্টগ্রামকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা ও নান্যাচর যাত্রীছাউনীকে জনগণের যাত্রী ছাউনীতে পরিণত করার জোর দাবি জানান।
সমাবেশ শুরুরআগে একটি মৌন মিছিল বের হয়ে শহীদ বেদিতে গিয়ে পুষ্পমাল্য অর্পনের পর আবারমিছিল সহকারে বিশ্রামাগার মাঠে এসে শেষ হয়।