৫৯ জেলায় মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী
সিএইচটিনিউজ.কম ডেস্ক:
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ৫৯ জেলায় মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। প্রতিটি জেলায় এক ব্যাটালিয়ন করে সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে। ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবেন।
প্রতি ব্যাটালিয়নে ৭৪০ জন করে ৫৯ জেলায় মোট ৪৩ হাজার ৬৬০ জন সেনাসদস্য মাঠে থাকবেন। সেনাসদস্যদের সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন আর্ম ফোর্স ডিভিশনের প্রধান লে. জেনারেল আবু বেলাল মোহম্মদ শফিউল হক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করবে। সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। তাদের সঙ্গে থাকবেন একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট। তবে বাকি পাঁচ জেলায় নিরাপত্তা দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জেলাগুলো হলো রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর ও জয়পুরহাট।
এ ছাড়া উপকূলীয় জেলাগুলোতে কোস্টগার্ডের সঙ্গে নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। জরুরি রসদ ও নির্বাচনী সামগ্রী পরিবহনে বিমানবাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার সন্ধ্যা সাতটা থেকেই সেনাবাহিনীর সদস্যরা নির্দিষ্ট জেলার উদ্দেশে রওনা দেন। ইতিমধ্যে সেনাসদস্যরা বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরির কাজ শুরু শেষ করে ভোর থেকেই নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ ডিসেম্বর সশস্ত্র বাহিনী, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ৬১ জেলার রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচনী কাজে সহায়তা করতে ২৬ ডিসেম্বর থেকে সেনাবাহিনী মাঠে নামবে। সে ঘোষণা অনুযায়ীই আজ নির্বাচনী এলাকাগুলোতে সেনা মোতায়েন হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনামতে, নির্বাচনী প্রতিটি জেলায় সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবেন। এর দায়িত্বে থাকবেন একজন লে. কর্নেল পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তা। মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রের জন্য ১৫ জন, ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের ১৬ জন, মেট্রোপলিটন এলাকার ভেতরে সাধারণ ভোটকেন্দ্রের জন্য ১৭ জন, ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৮ জন করে সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এ ছাড়া পার্বত্য, দ্বীপ এলাকা ও হাওর এলাকায় প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৭ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৯ জন করে সদস্য মোতায়েন করা হবে।
অন্যদিকে জেলায় এক ব্যাটালিয়ন ও থানা-উপজেলা পর্যায়ে সশস্ত্র বাহিনীর দুই-চার প্লাটুন সেনা মোতায়েন থাকবে। তবে তারা শো অব ফোর্স হিসেবে টহলে নিয়োজিত থাকবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনের আগে ও পরে পুলিশ ও আনসার বাহিনী নয় দিন নিয়োজিত থাকবে। এর মধ্যে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ভোট গ্রহণের আগের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন এবং ভোট গ্রহণের পরের দিন। আনসার বাহিনী নিয়োজিত থাকবে পাঁচ দিন। অর্থাৎ ভোট গ্রহণের আগের তিন দিন, ভোট গ্রহণের দিন এবং ভোট গ্রহণের পরের দিন।
তথ্যমতে, বিজিবি ও কোস্টগার্ড ৩ থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নিয়োজিত থাকবে। র্যাব ও আর্মড পুলিশ ১ থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। তবে ১৫৪ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় প্রায় পাঁচ কোটি ভোটার ভোট দিতে পারছে না। এখন ১৪৬ আসনে চার কোটি ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার ৬৭০ জন ভোটার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। ভোট হবে ১৮ হাজার ১২৩টি ভোটকেন্দ্রের ৯০ হাজার ৭২৪টি কক্ষে।
সূত্র: প্রেসবক্স২৪.কম