৮৯’র গণহত্যার স্মরণে লংগদুতে পিসিপি’র স্মরণসভা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন
লংগদু (রাঙামাটি) : “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দমনমূলক অগণতান্ত্রিক ১১ নির্দেশনা বাতিল কর, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা-সেটলার কর্তৃক সংঘটিত লংগদু গণহত্যাসহ সকল গণহত্যার শ্বেতপত্র প্রকাশ কর”এই শ্লোগানে ৮৯’র গণহত্যার স্মরণে আজ ৪ মে ২০১৭, বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় রাঙামাটির লংগদু উপজেলার হাড়িহাবা ধনপুদি বাজারে স্মরণসভা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা।
পিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সদস্য কাজল চাকমার সঞ্চালনা ও সাংগঠনিক সম্পাদক কংসাই মারমার সভাপতিত্বে স্মরণসভা ও প্রদীপ প্রজ্জলন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ইউনাইটেড পিপিলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) লংগদু অঞ্চলের সংগঠক দীপ্ত চাকমা, পিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক জয়ন্ত চাকমা, লংগদু ইউপি চেয়ারম্যান কলিন মিত্র চাকমা, সুবলং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য মধুমিলন চাকমা ও লংগদু ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন সদস্য বুদ্ধ রঞ্জন চাকমা প্রমুখ।
সভার শুরুতেই গণহত্যায় শহীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে সকলেই এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
সভায় বক্তারা বলেন, লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ সরকারকে গুলি করে হত্যার ঘটনাকে শান্তিবাহিনীর উপর দায় চাপিয়ে দিয়ে ১৯৮৯ সালের এই দিনে প্রতিশোধের
নেশায় সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সেটলাররা পাহাড়ি গ্রামে ঢুকে বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর রিপোর্ট অনুযায়ী এই হত্যাযজ্ঞে নারী-শিশুসহ প্রায় ৩৬ জন জুম্ম নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন। প্রকৃত হিসাবে এর পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে বলে এলাকাবাসীর ধারনা। এছাড়া সেনা-সেটলাররা বুদ্ধ মন্দির, বুদ্ধ মুর্তি এবং গীর্জাসহ ৬টি গ্রামের প্রায় কয়েকশত ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে।
বক্তারা আরো বলেন, তৎকালীন পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য, লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও ৩নং লংগদু মৌজার হেডম্যান অনিল বিহারী চাকমাও রেহাই পাননি এ সাম্প্রদায়িক হামলা থেকে। তার বাড়িতে আশ্রয় নেয়া লোকজন এবং তার স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করে সেনা-সেটলাররা। কিন্তু কোন সরকার এ পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের বিচার কিংবা শ্বেতপত্র প্রকাশ করেনি।
স্মরণসভা থেকে বক্তারা অবিলম্বে লংগদু গণহত্যাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবতকাল সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার ও শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
স্মরণসভা শেষে হত্যাকাণ্ডের শিকার সকল শহীদদের স্মরণে অস্থায়ী শহীদ বেদির সম্মূখে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়।
———————————————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।